“মৌমাছি মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচি দাঁড়াও না একবার ভাই, ওই ফুল ফোটে বনে যাই মধু আহরণে দাঁড়াবার সময় যে নাই”- নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের ‘কাজের লোক’ ছড়ার এ দুটি লাইন থেকে ধারণা পাওয়া যায় কতোটা কর্মঠ এই মৌমাছি।
শুধু তাই নয় এই পতঙ্গটি যেভাবে নিয়ম মেনে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করে তা অবাক করার মতো। একটি কারখানায় যেমন শ্রমিকদের আলাদা আলাদা দায়িত্ব থাকে। মৌমাছিদের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই।
কেউ নার্সের ভূমিকায় বাচ্চাদের যত্ন নেয়, কেউবা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হয়ে মৌচাক পরিষ্কার রাখে। অন্যরা মধু তৈরি করে আর পরাগায়নে ভূমিকা রাখে।
আর তাদের এসব কাজ তদারকিতে কোন সুপারভাইজার লাগে না। নিজেদের বরাদ্দ কাজে তারা ভীষণ দায়িত্বশীল।
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এক বিশাল নির্ভরতা রয়েছে ছোট এই পতঙ্গের ওপর। কখনও যদি মৌমাছি বিলুপ্ত হয়ে পড়ে তাহলে মানুষসহ পুরো প্রাণীকুল নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে।
পরিবেশে মৌমাছির এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে প্রতি বছর ২০শে মে বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
মৌমাছি নিয়ে সাতটি চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে এই নিবন্ধে যার সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বিবিসি প্ল্যানেট আর্থ, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাসহ আরও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে।
মৌমাছির প্রশাসন
মৌমাছি একটি সামাজিক পতঙ্গ। এরা দলবদ্ধভাবে চাক বানিয়ে বাস করে।
চাকগুলোতে যে ষষ্ঠভূজাকৃতির অসংখ্য খাঁজ থাকে, তার সবগুলো কিন্তু একই কাজে ব্যবহার করা হয় না।
কোনটিতে মৌমাছির লার্ভা, কোনটিতে মধু আবার কোনটিতে পরাগ জমা করা হয়। আর বাকি খাঁজগুলোয় মৌমাছি নিজেরা বাস করে।
মৌচাক তৈরি ও টিকিয়ে রাখতে হাজারো মৌমাছি একসাথে কাজ করে। আর প্রতিটি মৌমাছির আলাদা আলাদা কিছু দায়িত্ব ভাগ করা থাকে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে, মৌমাছির মস্তিষ্ক যেখানে একটা তিলের দানার সমান। সেখানে তারা কিভাবে নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নেয়?
এর পেছনে বড় কারণ তাদের জেনেটিক গঠন আর হরমোন। বয়সের সাথে সাথে তাদের মস্তিষ্কের রসায়ন বদলায়। যা তাদেরকে নির্দেশ করে কখন কোন দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফির তথ্য মতে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মৌমাছি চারটি ধাপে এই দায়িত্ব পালন করে।
প্রথমত মৌমাছির খাঁজে একটি করে ডিম পাড়া হয়। ডিম থেকে লার্ভা বের হতে ছয় দিন সময় লাগে।
জন্মের তিন সপ্তাহের মাথায় তারা পিউপায় পরিণত হয়ে খাঁজ থেকে বেরিয়ে আসে। বের হওয়ার সময় তারা খাঁজ পরিষ্কার করে নেয়।
তিন দিন পর পিউপাগুলো কিছুটা বড় হয়ে নার্সের দায়িত্ব পালন করে এবং চাকের অন্য লার্ভাদের যত্ন নেয়। নার্সের কাজ তারা সাত দিন করে।
এর পরের সাত দিন তারা মৌচাক তৈরি, মধু সংরক্ষণের কাজ করে সেই সাথে অন্যান্য পোকামাকড় থেকে মৌচাক রক্ষায় মৌচাকের প্রবেশ মুখে প্রহরীর কাজ করে।
এরপর মৌমাছিগুলো পরের ধাপের কাজের জন্য অনেকটাই উপযুক্ত হয়ে ওঠে এবং তারা বাইরে মধু সংগ্রহে নেমে পড়ে।
পরের ১০ দিন নিরলসভাবে এই কাজ করে। আর এই টানা কাজের ফলে মৌমাছিগুলোর মৃতপ্রায় অবস্থা হয়।
অনেকেই চাকের খাঁজের ভেতরেই মারা যায়। তখন মৌমাছিদের আরেকটি অংশ বা ‘আন্ডারটেকার’ তাদের চাক থেকে বের করে দেয় বা মৃতের সৎকার করে।
আবার অসুস্থ মৌমাছিদের মধু খাইয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করে কর্মী মৌমাছি।
কিন্তু চিকিৎসায় কেউ সুস্থ না হলে মৌমাছিরা তাকে মৌচাকের বাইরে ফেলে দিয়ে আসে যেন ভেতরে রোগবালাই না ছড়ায়।
সবকিছু চলে ভীষণ নিয়মতান্ত্রিকভাবে। যে চাকের মৌমাছিরা যতো চৌকশ তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা ততো বেশি।
মৌমাছির চাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে স্ত্রী মৌমাছি। আর পুরুষ মৌমাছি বা ‘ড্রোন’ বংশবিস্তার করা ছাড়া কোন কাজই করে না।
এমনকি নিজেদের খাবারের জন্য তারা স্ত্রীদের ওপর নির্ভর করে। কেননা পুরুষ মৌমাছির হুল বা মধু আহরণের অঙ্গ নেই।
তাদের কাজ কেবল বংশবিস্তার করা এবং কয়েকবার মিলনের পর তারা বাঁচতেও পারে না।
গুরুত্ব কম হওয়ার কারণে শীতকালে খাদ্য সংকটের সময় স্ত্রী মৌমাছিরা পুরুষ মৌমাছি বা ড্রোনগুলোকে মৌচাক থেকে বের করে দেয়।
মৌমাছি কীভাবে চাক বানায়
প্রথমে মৌমাছিরা একটি আদর্শ জায়গা খুঁজে বের করে। যেখানে দিনে সূর্যের আলো পড়ে আবার শিকারিদের থেকে আড়ালে থাকা যায়।
তারপর তারা সেই জায়গাটা পরিষ্কার করে। আর এই পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার করে প্রোপোলিস।
গাছের কুড়ির সাথে লালা মিশিয়ে মৌমাছি প্রোপোলিস নামের এই আঠালো পদার্থ তৈরি করে যা প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক।
এরপর ওপর থেকে একজন আরেকজনের সাথে ঝুলে ঝুলে লম্বা চেইন তৈরি করে এবং মোম দিয়ে মৌচাক বানায়।
কর্মী মৌমাছিরা তাদরে জন্মের ১২ থেকে ২০ দিনের মধ্যে চাক বানানোর মোম তৈরির কাজ করে।
মৌমাছির পেটের বিশেষ গ্রন্থি থেকে তরল মোম নিঃসরিত হয়। বাতাসের সংস্পর্শে তা জমাট বাধে।
আরেকটি মৌমাছি পেট থেকে এই মোম নিয়ে সেটার সাথে লালা ও পরাগ মেশায় এবং চিবিয়ে চিবিয়ে মোমটিকে চাক বানানোর উপযুক্ত করে তোলে।
এরপর মৌমাছির আরেক দল এই মোম নিয়ে গোল সিলিন্ডারের মতো গড়ন দেয়, এভাবে পাশাপাশি এই সিলিন্ডারগুলো বসানো হয়।
এর পরের প্রক্রিয়াটা দারুণ। সব সিলিন্ডার বসানো হয়ে গেলে সব মৌমাছি একসাথে পাখা ঝাপটে তাপ উৎপন্ন করে এবং মোম কিছুটা গলে যায় তখন প্রতিটা সিলিন্ডার ছয় কোনা বিশিষ্ট হয়ে পড়ে এবং জোড়া লেগে যায়।
মৌচাকের ছয়-কোনা বিশিষ্ট বা হেক্সাগোনাল নকশা তৈরিতে সবচেয়ে অল্প মোম লাগলেও এর গঠন খুবই মজবুত হয়। এবং একটি চাকে কয়েক কেজি পর্যন্ত মধু ধারণ করা যায়।
দেখা গিয়েছে মাত্র ৪৫ গ্রাম মোম দিয়ে তৈরি চাকে তিন কেজি মধু সংরক্ষণ করা যায়।
মৌচাক তৈরির পর এর সবচেয়ে ওপরের তলায় মধু সংরক্ষণ করা হয়। এরপরের ফুলের পরাগ জমানো হয়। তার নিচে থাকে স্ত্রী মৌমাছির লার্ভা, এর নিচে থাকে পুরুষ মৌমাছির লার্ভা এবং একদম নিচে থাকে ভবিষ্যতের রাণী মৌমাছির লার্ভা।
মৌচাক রক্ষায় পাহারাদার মৌমাছি থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখলে তারা আরও মৌমাছিকে তলব করে যেন যেকোন হামলা একসাথে প্রতিহত করা যায়।
মৌচাক ঠাণ্ডা রাখতে তারা পানি বয়ে এনে পাখা উড়িয়ে বাষ্পীভূত করে যেন তাপমাত্রা কমে।
একটি মৌমাছির চাকে অন্তত ৫০ হাজার মৌমাছি জায়গা করতে পারে। মৌচাকে জনসংখ্যা বেড়ে গেলে তাদের একটা অংশ স্থানান্তরিত হয়।
তবে তারা সহজে পুরো মৌচাক খালি করে না। বংশ পরম্পরায় কয়েক দশক ধরে একই মৌচাক ব্যবহার হয়ে থাকে।
রানি মৌমাছি রানি কেন?
মৌমাছিদের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাধর হল রানি মৌমাছি। মৌচাকের ডিম পাড়ার দায়িত্ব পালন করে এই রানি। এর বাইরে আর কোন কাজ করে না।
রানি মৌমাছি আকারে সবার থেকে বড় এবং তার সম্পূর্ণরূপে বিকশিত ডিম্বাশয় থাকে যা তার রানি হয়ে ওঠার মূল কারণ।
একটি রানি মৌমাছি দিনে দুই হাজারের বেশি ডিম পাড়তে পারে। এজন্য প্রতিদিন একাধিকবার পুরুষ মৌমাছিদের সাথে মিলিত হয়। অনেক সময় পুরুষ মৌমাছি মিলিত হওয়ার পর পর মারা যায়।
রানি মৌমাছির ডিম থেকে স্ত্রী মৌমাছি জন্মায় যারা ভবিষ্যতের দায়িত্ব বণ্টনে ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে কর্মী মৌমাছিরা কিছু বিরল ক্ষেত্রে ডিম পাড়লেও সেটা অনুর্বর হয় যা থেকে পুরুষ মৌমাছি বা ড্রোন জন্মায়। যারা মৌচাক টিকিয়ে রাখতে তেমন কাজে লাগে না।
রানি মৌমাছির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি ফেরোমোন বা রাসায়নিক গন্ধ ছড়ায় যা মৌচাকে তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সাহায্য করে। এমনিতে রানি মৌমাছির মগজ কর্মী মৌমাছিদের চাইতে ছোট।
যদি কোন মৌচাকের রানি হঠাৎ মারা যায়, তখন মৌমাছিরা অস্থির হয়ে পড়ে। এমন জরুরি পরিস্থিতিতে কর্মী মৌমাছিরা কয়েকটি রানি লার্ভা সনাক্ত করে সেগুলিকে রানি করে গড়ে তুলতে শুরু করে।
রানি মৌমাছি যখন লার্ভা অবস্থায় থাকে তখন তাকে চিনিযুক্ত বিশেষ মধু খাওয়ানো হয় যাতে সেটি পরিপুষ্ট হয়ে উঠতে পারে।
রানি মৌমাছির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এটি কখনও হুল ফোটায় না। তবে বিবিসি সায়েন্স ফোকাস বলছে অপরিণত রানি মৌমাছি অন্যান্য অপরিণত রানিদের খুঁজে বের করে তাদের হুল ফুটিয়ে মেরে ফেলে যেন তার একক শাসন বজায় থাকে।
ফুল, ফল, শস্য টিকিয়ে রাখছে মৌমাছি
আপনি যে শাক সবজি ফল মূল খাচ্ছেন সেটা উৎপাদনে বা আপনার ফুলের বাগান এতো রঙিন রাখতে কে সাহায্য করছে? এর উত্তর হল মৌমাছির মতো পতঙ্গ। তারা এসব উদ্ভিদের পরাগায়ন বা প্রজননে ভূমিকা রাখে।
ফুল চায় তাদের পরাগগুলো যেন অন্য ফুলে ছড়িয়ে যায়। মৌমাছি সেই কাজটাই করে।
মৌমাছি যখন এক ফুল থেকে আরেক ফুলে মধু আহরণ করতে তখন মৌমাছির গায়ে লেগে যাওয়া প্রথম ফুলের পুরুষ পীঠের পরাগ রেণু অন্য ফুলের স্ত্রী গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়।
তখনই ফুলের পরাগায়ন ঘটে। এভাবে ফল, আঁশ, বাদাম এবং প্রায় সব ধরণের ফসল বংশবিস্তার করতে পারে।
গবেষণা বলছে, ৯০ শতাংশ বন্য ফুল, ৭৫ শতাংশ ফসল এবং ৩৫ শতাংশ বৈশ্বিক কৃষির পরাগায়নের পেছনে ভূমিকা রাখছে মৌমাছির মত পতঙ্গ।
মৌমাছি যেমন পরাগ ছড়িয়ে দেয়। তেমনি তারা নিজেদের খাওয়ার জন্য ফুটন্ত ফুল খুঁচিয়ে পরাগ বের করে।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন মৌমাছি পরাগগুলো মৌচাক পর্যন্ত বয়ে আনে কীভাবে? জেনে অবাক হবেন মৌমাছির পেছনের পায়ে পরাগ বহন করার দুটো ঝুড়ি রয়েছে। একে বলে কর্বিকিউলা।
মৌমাছি পরাগের সাথে নিজের লালা এবং ফুলের মিষ্টি রস মিশিয়ে দলা তৈরি করে তারপর পেছনের পায়ের কর্বিকিউলাতে ভরে রাখে।
একটি মৌমাছি তার দুই পায়ে তিন লাখেরও বেশি পরাগের দানা বহন করতে পারে। এরপর তারা চাকে ফিরে খালি খাঁজগুলোয় এগুলো জমিয়ে রাখে এবং এর সাথে কিছুটা মধু মিশিয়ে ম্যারিনেট করে নেয়।
এই পরাগ মৌচাকের প্রোটিনজাতীয় খাবার যা চাকের সব মৌমাছি মিলেমিশে খায়।
মধু সংগ্রহ
মৌমাছি প্রথমে একটি উপযুক্ত ফুল গাছ বাছাই করে এবং এর গভীর থেকে নেকটার বা রস আহরণ করে। এই রস আহরণে তারা ব্যবহার করে মাথার সামনে থাকা লম্বা শুঁড়।
এভাবে শুঁড় বেয়ে ফুলের রস মৌমাছির পাকস্থলীতে জমা হয়। নেকটার থেকে মৌমাছি তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন পায় তেমনি মধুও তৈরি করে।
মৌচাকে আসার পর মৌমাছি তার পাকস্থলী থেকে সব রস বের করে খাঁজে জমা করে এসময় অন্য মৌমাছিরা পাখা উড়িয়ে নেকটার থেকে পানি বাষ্পীভূত করে ফেলে এতে নেকটার মধুর রূপ পায়। একটি খাঁজ মধুতে পূর্ণ হলে সেটি মোম দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়।
হাজার বছর ধরে মৌমাছির চাক থেকে মানুষের মধু সংগ্রহ করে খাওয়ার চল রয়েছে। মিশর, রোমান ও গ্রিক সভ্যতায় এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মধ্য যুগ থেকে ইউরোপে মৌমাছি চাষ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
একটি পরিশ্রমী মধু মৌমাছি তার সারা জীবনে এক চা চামচের ১২ ভাগের এক ভাগ মধু উৎপাদন করতে পারে।
তার মানে আপনি যদি এক চামচ মধু খান তাহলে জেনে রাখবেন এইটুকু মধু সংগ্রহের জন্য ১২টি কর্মী মৌমাছিকে সারাদিন বিরামহীন শ্রম দিতে হয়েছে।
ব্যাংক লুটের মতো মৌমাছির চাকের জমানো মধুও লুটপাট হয়। আর এই লুটপাট করে জায়ান্ট হর্নেট নামে মৌমাছির মতোই আরেকটি প্রাণী।
তারা দলবেঁধে মৌমাছির চাকে আক্রমণ করে মধু, পিউপা, লার্ভা সবকিছু চুরি করে নিয়ে যায়।
কিন্তু মৌমাছিও ছেড়ে দেয়ার পাত্র না। তারা এজন্য দলবেঁধে একসাথে আক্রমণ করে। এজন্য হর্নেট সবসময় শক্তিশালী কলোনিগুলো এড়িয়ে চলে আর দুর্বল কলোনিতে হামলা চালায়।
মৌমাছির জনসংখ্যা
বিশ্বে মৌমাছির প্রায় আড়াইশ প্রজাতি রয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ প্রজাতির মৌমাছি মধু সংগ্রহ আর পরাগায়নের কাজ করে।
বিবিসি নিউজ অ্যারাউন্ডের তথ্য মতে, গত এক দশকে মৌমাছির সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে। সাত ধরণের প্রজাতি মহা বিপন্নের তালিকায় রয়েছে।
যার মূল কারণ, জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ন, ফুল কমে যাওয়া এবং মৌচাক গড়ার মতো ঝোপঝাড় বা গাছ কমে যাওয়া।
অনেক মৌচাক ভাইরাসসহ নানা রোগে দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে আবার ফসলকে পোকামাকড় থেকে রক্ষায় যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয় এতেও মৌমাছি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে গিয়েছে।
মৌমাছির জনসংখ্যা ঠিক রাখতে মানুষের বেশি বেশি ফুল ও ফলের গাছ লাগানোর কথা বলা হয়েছে বিবিসি নিউজ অ্যারাউন্ডে।
মৌমাছির চাক ভাঙলে অন্তত অর্ধেকটা অক্ষত অবস্থায় রেখে দিতে হবে যেন তারা পুনরায় সেখান থেকে মৌচাক গড়তে পারে।
মৌমাছি কখন আক্রমণ করে
মৌমাছি আক্রমণাত্মক পতঙ্গ নয়। মৌমাছি সহজে হুল ফোটায় না। কেননা হুল ফোটালে মৌমাছি নিজেও অনেকসময় মারা যায়।
এটি শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য হুল ফোটায়। মৌমাছির লেজের দিকে হুল থাকে।
হুল বিষাক্ত হওয়ায় মৌমাছির কামড়ে তীব্র যন্ত্রণা হয়ে থাকে। যদি মৌমাছি কাউকে ঝাঁক বেধে হুল ফোটায় তাহলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।