লাউ ও কুমড়ার ফল নষ্ট/ পচে যাওয়ার কারন ও প্রতিকার।
সাধারনত কয়েকটি কারণে লাউ ও কুমড়ার কচি / কড়া পচে যায়। এর প্রধান কারন গুলো হলো:
১. এনথ্রাকনোজ/ছত্রাকের সংক্রমণ হলে।
২. ফলের মাছি পোকার আক্রমণ হলে।
৩. পরাগায়ন না হলে।
৪. পুষ্টির অভাব হলে।
১। এনথ্রাকনোজ/ ছত্রাকের সংক্রমণ হলে:
এনথ্রাকনোজ/ ছত্রাকের সংক্রমণ হয় তবে ফল পচে যায়, এক্ষেত্রে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
এনথ্রাকনোজ/ফল পচা রোগ রোগ দমনের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন: ফরাষ্টিন ১ গ্রাম বা গোল্ডাজিম. ০.৫ মিলিটার বা এমকোজিম বা কিউবি বা কমপ্যানিয়ন ২ গ্রাম) প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে অথবা প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১ মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।
২। ফলের মাছি পোকার আক্রমণ হলে:
মাছি পোকার আক্রমণ হলেও ফল পচে যায় তবে এক্ষেত্রে আক্রান্ত ফলে পোকার লার্ভা দেখা যায়। আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে লম্বা লম্বি ভাবে কটালে ভেতরে পোকার লার্ভা দেখা যাবে।
উদ্ভিদ একধরণের পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয় যা দেখতে সাধারণ মাছির মতো, স্বচ্ছ পাখা, হলুদ পা, ত্রিকোণাকার পেট ও বাদামী ঘাড় মাঝে লম্বা হলুদ দাগ বিশিষ্ট। এটি খুবই ক্ষতিকর পোকা যা ফসলের ১০০ ভাগ ক্ষতি করে থাকে সময়মত দমন না করলে।
লক্ষন:
* আক্রান্ত ফল থেকে পানির মতো তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে যা শুকিয়ে বাদামী বর্ণ ধারণ করে।
* ডিম থেকে কীড়া বের হয় তা পরে ফলের শাস খেতে শুরু করে যার কারণে ফল বিকৃত হয়, পচে যায় ও হলুদ বর্ণ ধারণ করে ঝরে পরে যায়।
* বিকৃত ফল না বাড়ার কারণে ফলন কমে যায়।
প্রতিকার
* ভালোভাবে জমি চাষ করতে হবে। পোকা আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। কচি ফল গুলোকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
* সেক্স ফেরোমন ফাদ স্থাপনের এর মাধ্যমে মাছি পোকা দমন বেশ কার্যকরী ও নিরাপদ।
* আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।
৩। পরাগায়নের অভাবে:
যদি পরাগায়ন না হয় তবে ফল পচে যায়। প্রতিদিন সদ্যফোটা পুরুষ ফুল ছিঁড়ে পুংরেণুসমৃদ্ধ পুংকেশর রেখে পাপড়িগুলো ছিড়ে ফেলতে হয়। এরপর পুংরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে হালকাভাবে সামান্য একটু ঘষে দিতে হয়। এতে স্ত্রী ফুল নিষিক্ত হয়ে ফল ধরে।
৪। পুষ্টির অভাব হলে:
গাছে যদি অতিরিক্ত ফলন হয় তখন গাছ অতিরিক্ত ফল ঝরিয়ে ফেলে, এক্ষেত্রে গাছের ধারন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ক্যালসিয়াম, বোরন ও আমরিকান NPKS সার সুষম মাত্রায় প্রয়োগ করা এবং গাছে পর্যাপ্ত পানি ও সূর্যালোকের ব্যাবস্থা করা।